করোনা ভাইরাসের জীবাণু শরীরে প্রবেশ করার পরপরই তার উপসর্গ দেখা দেয় না। তাই করোনা আক্রান্ত দেশ ঘুরে আসার পর বা আক্রান্ত রোগী সংস্পর্শে আসার পর হতে পারে সংক্রমণ। আসলেই কোনো ব্যক্তি আক্রান্ত কি-না তা পরিষ্কার হতেই সময় লাগে সপ্তাহ খানেক। আর এজন্যই রাখা হয় কোয়ারেন্টাইনে।
অন্য রোগীদের কথা ভেবে এ ধরনের ব্যক্তিদের জন্য হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করা হয় না। এখানেও সময়সীমা ১৪ দিন। এসময় বাইরে বের হতে নিষেধ করা হয়, রোগীর সঙ্গে কম যোগাযোগ করতে বলা হয়। মেনে চলতে হয় স্বাস্থ্যবিধি।
কোনো ব্যক্তি যখন নিজের বাড়িতেই কোয়ারেন্টাইনের সব নিয়ম মেনে, বাইরের লোকজনের যোগাযোগ বন্ধ রাখেন সেটিই হোম কোয়ারেন্টাইন। সাধারণত, সম্প্রতি আক্রান্ত দেশ থেকে ঘুরে এলে রোগীকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। এর মেয়াদও ১৪ দিন। এটা মূলত করা হয় শরীরে কভিড-১৯ রোগ বাসা বেঁধেছে কি-না তা জানার জন্য।
এসময়ের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এমন খাবার খেতে হবে এবং সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।
কারও শরীরে যদি করোনা ভাইরাসের লক্ষণ প্রকাশ পায় এবং নমুনা পরীক্ষার ফল পজিটিভ হয় অর্থাৎ কারও যদি করোনা ভাইরাস ধরা পড়ে তবে তাকে আইসোলেশনে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।
এসময় চিকিৎসক এবং নার্সদের তত্ত্বাবধানে রোগীকে অবশ্যই হাসপাতালে থাকতে হবে। এর মেয়াদ ১৪ দিন। রোগীর অবস্থা দেখে বাড়ানো হয় মেয়াদ।
এসময়ের মধ্যে রোগীর সঙ্গে কাউকে দেখা করতে দেওয়া হয় না সাধারণত। এসময়ের মধ্যে রোগীকে কিছু অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ দেওয়া হয় যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহযোগিতা করে। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি তারা অনেকেই এ পদ্ধতিতে সুস্থ হন আবার যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের পক্ষে সুস্থ হয়ে ওঠা কঠিন হয়ে যায়।
- ঘরের পােষা প্রাণী (যেমন- বিড়াল/কুকুর ইত্যাদি) নভেল করােনা ভাইরাস দিয়ে আক্রান্ত হয় এমন কোন প্রমাণ এখনাে পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
- তবে পােষা প্রাণীর সংস্পর্শে আসার পর সব সময় সাবান-পানি দিয়ে হাত ধােওয়া উত্তম।
- এই অভ্যাসের সুবাদে পােষা প্রাণী থেকে মানবদেহে রােগ ছড়ায় এমন সব ব্যাকটেরিয়া, যেমন- ই-কোলাই, সালমােনেলা ইত্যাদি থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়।
- যে কোন বয়সের ব্যক্তি নভেল করােনা ভাইরাস দিয়ে আক্রান্ত হতে পারে।
- বয়স্ক এবং যাদের আগে থেকে কোন অসুস্থতা (যেমন- অ্যাজমা, ডায়াবেটিস, হৃদরােগ) আছে, এমন ব্যক্তি করােনা ভাইরাস দিয়ে আক্রান্ত হলে, তাদের গুরুতর অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
- বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সব বয়সী মানুষকে ভাইরাস থেকে প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা (যেমন স্পর্শ স্বাস্থ্যবিধি, শ্বাসতন্ত্রের স্বাস্থ্যবিধি) মেনে চলতে পরামর্শ দিচ্ছে।
- না, অ্যান্টিবায়ােটিক ভাইরাস-এর বিরুদ্ধে নয়, ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকরী।
- নভেল করােনা ভাইরাস এক ধরণের ভাইরাস বিধায় এর চিকিৎসা বা প্রতিরােধে অ্যান্টিবায়ােটিকের ব্যবহার করা উচিৎ নয়।
- তবে, যদি কেউ নভেল করােনা ভাইরাস দিয়ে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন, তিনি। ব্যাকটেরিয়া থেকে সহ-সংক্রমণের জন্য অ্যান্টিবায়ােটিক পেতে পারেন।
- না, এখনাে পর্যন্ত নভেল করােনা ভাইরাস এর চিকিৎসা বা প্রতিরােধে কার্যকরী নির্দিষ্ট কোন ঔষধ নেই।
- কিন্তু, আক্রান্ত ব্যক্তিদের উপসর্গ উপশমের জন্য উপযুক্ত চিকিৎসা এবং গুরুতর অসুস্থ
ব্যক্তিদের জন্য পর্যাপ্ত সহায়ক স্বাস্থ্য সেবা (সাপােটিভ কেয়ার) দিতে হবে। - সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা ব্যবস্থা পরীক্ষাধীন, যা ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে।
- বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও তার সহযােগী প্রতিষ্ঠানসমূহ এ সংক্রান্ত গবেষণা ত্বরান্বিত করার জন্য
সহযােগিতা করছে।
- মাউথওয়াশ ব্যবহার করলে করােনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকা যাবে এমন প্রমাণ এখনও
পাওয়া যায়নি। - কোন কোন মাউথওয়াশ হয়ত কিছুক্ষণের জন্য আপনার লালায় থাকা অন্যান্য জীবাণুকে
মেরে ফেলতে সক্ষম। কিন্তু তার ফলে যে করােনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকা যাবে তার নিশ্চয়তা নেই।