করোনা ভাইরাস ব্যাধি হচ্ছে একটি সংক্রামক ব্যাধি, যা খুব দ্রুত সংক্রমিত হয়। এই ভাইরাসটিকে আমরা করোনা ভাইরাস বা COVID-19 হিসেবে চিনি। এই রোগটি শ্বাসযন্ত্রের নানা সমস্যা এবং অসুখ তৈরী করে, যেমন ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ফ্লু। এর উপসর্গ হিসেবে কাশি, জ্বর এবং আরো গুরুতর ক্ষেত্রে শ্বাসক্রিয়ায় সমস্যা তৈরী করে। এখন পর্যন্ত এই ব্যাধির কোনো নিরাময় কিংবা টিকা আবিষ্কৃত হয়নি। বাংলাদেশ রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (IEDCR) এদেশে প্রথম করোনা ভাইরাস এর রোগী সনাক্ত করে ৭ মার্চ, ২০২০ তারিখে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের কথা বিবেচনা করলে, আমরা এই মুহূর্তে জাতীয় পর্যায়ে এই ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছি।
এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের সঠিক উৎস সম্পর্কে জানা যায়নি । একবার যদি ভাইরাসের উৎস প্রাণীটি শনাক্ত করা সম্ভব হয়, তাহলে রোগটি মোকাবেলা করা অনেক সহজ হবে। করোনা ভাইরাসের সঙ্গে সম্পর্ক আছে চীনের উহান প্রদেশের দক্ষিণ অঞ্চলের একটি সামুদ্রিক খাবারের পাইকারি বাজারের সঙ্গে।
যদিও বেশ কিছু সামুদ্রিক প্রাণী করোনা ভাইরাস বহন করতে পারে (যেমন: বেলুগা তিমি), ওই বাজারটিতে অনেক জীবন্ত প্রাণীও পাওয়া যেত, যেমন মুরগি, বাদুর, খরগোশ, সাপ ইত্যাদি। এসব প্রাণী করোনা ভাইরাসের উৎস হতে পারে। গবেষকরা বলছেন, চীনের হর্সশু নামের একপ্রকার বাদুরের সঙ্গে এই ভাইরাসের ঘনিষ্ঠ মিল রয়েছে।
ভাইরাসটি কোন একটা প্রাণী থেকে মানুষের দেহে ঢুকেছে এবং একজন থেকে অন্য জনের দেহে ছড়াচ্ছে আবার নিজের জিনগত গঠনে সব সময় পরিবর্তন আনছে, যাকে বলে মিউটেশন। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই পুরো বিশ্বে এই ভাইরাসটি বিপদজনক হয়ে উঠেছে।
কিন্তু এ ভাইরাসটির প্রকৃতি এবং কিভাবে তা রোধ করা যেতে পারে – এ সম্পর্কে এখনো বিজ্ঞানীরা বিশদভাবে জানার চেষ্টা করছেন। সার্স বা ইবোলার মতো নানা ধরণের প্রাণঘাতী ভাইরাসের খবর মাঝে মাঝেই সংবাদ মাধ্যমে আসে। এই করোনা ভাইরাস তার মধ্যে সর্বশেষ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, গত ২৩ মার্চ, ২০২০ তারিখ পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী COVID-19 এর সনাক্ত করা রোগী দের প্রায় ১৪% মারা গিয়েছে। তুলনা করতে গেলে বলা যায় মৌসুমি ইনফ্লয়েঞ্জা বা ফ্লু তে সংক্রমিত মানুষের মধ্যে ১% এর কম মারা যায়।